মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের আলীনগর, সুনছড়ার পর কুলাউড়া উপজেলার চাতলাপুর চা বাগানে মালিক পক্ষে নিরিখ (পাতি উত্তোলন) বাড়ানোর প্রতিবাদে ক্ষুব্দ হয়ে উঠছেন নারী শ্রমিকরা। ১৮ কেজি পাতি উত্তোলনে নিরিখ ছিল। বর্তমানে কর্তৃপক্ষ ২০ কেজিতে নিরিখ করার প্রতিবাদে এসব চা বাগানে বিক্ষোভ করছেন নারী শ্রমিকরা।

শনিবার সকাল থেকে চাতলাপুর চা বাগানে হাজারো নারী শ্রমিকরা কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ করেন।

চা শ্রমিকরা জানান, সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চা বাগানের টিলা-টক্করে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে পাতি উত্তোলন করতে হয় নারী শ্রমিকদের। সারাদিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে কেউ নিরিখ পুরো করে আবার কেউ নিরিখ পুরো করতে পারেন না। নিরিখের চেয়ে ১ কেজি কম হলে ১০ টাকা কেটে রাখা হয়। আর এক কেজি বেশি তুললে দ্বিগুণ দেয়ার কথা থাকলেও দেয়া হয় মাত্র ৪ টাকা। এরই মধ্যে চা বাগান ম্যানেজমেন্ট ১৮ কেজির স্থলে ২ কেজি বাড়িয়ে ২০ কেজিতে নিরিখ করে নারী শ্রমিকদের উপর চাপ বৃদ্ধি করেছে। এর প্রতিবাদে চাতলাপুর চা বাগানে অফিসের সম্মুখে কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ করেন নারী চা শ্রমিকরা।

আন্দোলনরত নারী শ্রমিক কুন্তি রবিদাস, বিনতি বাউরী, কমলা মৃধা, রিপা ইন্দোয়ার, বাসন্তী বাউরী, সাবিত্রি বৈদ্য বলেন, চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি মাত্র ১৭০ টাকা। তাতে নিরিখে ১৮ কেজি পাতি উত্তোলন করলে প্রতি কেজি পাতির মূল্য দাঁড়ায় ৯ টাকা পয়তাল্লিশ পয়সা। শ্রম আইনে রয়েছে অতিরিক্ত উত্তোলনে দ্বিগুণ মজুরি দেয়ার কথা।

দ্বিগুন টাকা না দিয়ে আবারো নারী শ্রমিকদের উপর ২ কেজি বেশি পাতি উত্তোলন করার মতো কাজের চাপ বৃদ্ধি করা হয়েছে। বর্তমানে ২০ কেজি নিরিখ করে নারীদের উপর শোষণের মাত্রা বৃদ্ধি করা হয়েছে এটি কোনমতেই যুক্তিযুক্ত নয়।

পূর্বের ১৮ কেজিতে নিরিখ বহাল রাখার বিষয়ে তারা দাবি জানান। অন্যতায় আবারো আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে তারা দাবি জানান।

চাতলাপুর চা বাগান ব্যবস্থাপক মো. কামরুজ্জামান বলেন, অন্যান্য বাগানে নিরিখ বাড়ানো হয়েছে। তাতে আমাদেরও বাড়াতে হচ্ছে। তাছাড়া হেড অফিসের নির্দেশনা ছাড়া আমরা কিছু করতে পারবো না।