তৃতীয়ত, বাংলাদেশ সরকারকে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে পানি সংরক্ষণ এবং বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি জাতীয় মাস্টার প্ল্যান তৈরি করতে হবে। এর মধ্যে বিশেষভাবে নির্ধারিত এলাকায় জলাধার তৈরি, নদীগুলোর খননকাজ বৃদ্ধি এবং বন্যা পূর্বাভাসের জন্য উন্নত প্রযুক্তি সংযোজন করতে হবে। এ ছাড়া ভারতের সঙ্গে সমন্বয় করে সীমান্তবর্তী অঞ্চলে বাঁধ ও সেচ প্রকল্পগুলোকে আরও কার্যকরী করতে হবে।
চতুর্থত, প্রতিটি বন্যাপ্রবণ এলাকায় জনগণের জন্য নিয়মিত সচেতনতা কর্মশালা এবং জরুরি প্রস্তুতির মহড়া আয়োজন করতে হবে। এতে অংশগ্রহণ করতে হবে স্থানীয় প্রশাসন, স্কুল এবং অন্যান্য সামাজিক সংগঠনকে। বন্যার পূর্বাভাস পেলে দ্রুত কর্মসংস্থান ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে, যাতে ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনা যায়।
পঞ্চম, দেশের সব রাজনৈতিক দলের উচিত একটি জাতীয় সংকটকালীন ঐক্য ফ্রন্ট গঠন করা, যার উদ্দেশ্য হবে জাতির সংকট মোকাবিলায় একযোগে কাজ করা। এই ফ্রন্টের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি করে, বিশেষ করে দুর্যোগের সময়ে রাস্তা অবরোধ, ধর্মঘট ও সংঘাত বন্ধ করতে হবে। জাতীয় স্বার্থের জন্য দলীয় মতপার্থক্য ভুলে গিয়ে সংকট সমাধানে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার আহ্বান জানানো উচিত।
বাংলাদেশ আজ একটি গভীর সংকটে নিমজ্জিত। প্রাকৃতিক দুর্যোগের পাশাপাশি, আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ কূটনৈতিক জটিলতা আমাদের ভবিষ্যৎকে অন্ধকারাচ্ছন্ন করে তুলছে। এই অবস্থায় দেশের সব স্তরের মানুষের উচিত একত্র হয়ে সমস্যার সমাধানে কাজ করা। যদি আমরা এখনই এই সংকট মোকাবিলায় উদ্যোগ না নিই, তবে আমাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে। জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের এখনই উচিত বাংলাদেশের পাশে দাঁড়ানো, নয়তো ইতিহাস তাদের ক্ষমা করবে না।
আসুন, সবাই মিলে এই সংকট মোকাবিলা করে দেশের ভবিষ্যৎকে রক্ষা করি। আমাদের সমন্বিত প্রচেষ্টা ও নৈতিক দায়িত্ববোধই পারে এই বিপর্যয় থেকে দেশকে রক্ষা করতে। এটা আমাদের জাতির প্রতি দায়িত্ব, আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের প্রতি প্রতিশ্রুতি।