ভাওয়াল স্টেশনের অদূরে বনখড়িয়া এলাকায় ট্রেনটির ইঞ্জিনসহ সাতটি বগি লাইনচ্যুত হয়ে একজন নিহত পাঁচ জন আহত হয়েছে।
আহতদের মধ্যে লোকো মাস্টার এমদাদুল হক, সহকারী লোকো মাস্টার সজিব মিয়াও রয়েছেন।
বুধবার ভোররাত চারটার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে নিশ্চিত করেছেন জয়দেবপুর রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার হানিফ আলী।
দুর্ঘটনায় আসলাম হোসেন (৩৫) নামে একজন যাত্রী মারা গেছেন বলে জানিয়েছেন রেলওয়ে পুলিশের পরিদর্শক শহিদুল ইসলাম।
মুরগি ব্যবসায়ী আসলামের বাড়ি ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের রওহা গ্রামে।
ঘটনার পর থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলপথ বন্ধ থাকলেও ময়মনসিংহগামী ট্রেন ঢাকা থেকে কিশোরগঞ্জ হয়ে চলাচল করছে বলে জানিয়েছেন রেলের কর্মকর্তারা।
জয়দেবপুর রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার হানিফ আলী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বুধবার ভোররাত চারটা থেকে সোয়া চারটার দিকে ঢাকাগামী মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেক্স ট্রেনটি রাজেন্দ্রপুর স্টেশন ছেড়ে যায়। কিছুদূর যাওয়ার পরপরই এর ইঞ্জিনসহ ৭টি বগি লাইনচ্যুত হয়ে পড়ে।
“আমরা শুনেছি দুর্বৃত্তরা রেললাইনের কিছু অংশ কেটে নিয়ে যাওয়ায় ওই দুর্ঘটনা ঘটেছে। এরপর থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ রুট ব্যবহারকারী সব ট্রেনের চলাচল বন্ধ রয়েছে।”
“বিষয়টি ঢাকায় রেলের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানোর পর সকাল পৌনে ৯টার দিকে উদ্ধারকারী ট্রেন ঘটনাস্থলে পৌঁছে কাজ শুরু করে, লাইন মেরামতের কাজও চলছে” বলেন তিনি।
এ ঘটনাকে ‘নাশকতা’ বলছেন হানিফ আলী।
রেলওয়ের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক (ট্রান্সপোর্টেশনন অ্যান্ড কমার্শিয়াল) মোহাম্মদ শফিকুর রহমান বলেন, রেললাইনের অন্তত ২০ মিটার অংশ গ্যাস কাটার দিয়ে কেটে ফেলা হয়েছে।
ঘটনাস্থলের কাছেই একটি গ্যাস সিলিন্ডার পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
দুই তদন্ত কমিটি
এ ঘটনা তদন্তে রেলওয়ে ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুইটি কমিটি করা হয়েছে।
রেলের ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে বিভাগীয় প্রকৌশলী (সংকেত ও টেলিযোগাযোগ) সৌমিক শাওন কবিরকে।
রেলওয়ে কর্মকর্তা মোহাম্মদ শফিকুর রহমান বলেন, “আমরা প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছি ঘটনাটি দুর্বৃত্তরা নাশকতার ঘটানোর জন্য করেছে। তারপরও সঠিক কারণ অনুসন্ধানে বিভাগীয় সংকেত ও টেলিযোগাযোগ প্রকৌশলীকে সৌমিক শাওন কবিরকে আহ্বায়ক করে সাত সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বিভাগীয় পরিবহন প্রকৌশলী, বিভাগীয় যাত্রী প্রকৌশলী, বিভাগীয় চিকিৎসকও আছেন এই কমিটিতে।
অন্যদিকে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. হুমায়ুন কবিরকে প্রধান করে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করার কথা জানিয়েছেন গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম।
দুটি কমিটিকেই তিন কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।