৮ জুলাই ২০১৪— ব্রাজিল বনাম জার্মানি ম্যাচের ফলাফল ৭-১।(বাংলাদেশি ফুটবল ভক্তরা ‘সেভেন আপ’ শব্দটি জুড়ে দিয়েছেন ব্রাজিলের নামের সঙ্গে।) সেই রাত কখনও কি ভুলতে পারবে ব্রাজিল? স্বাগতিক দেশ হিসেবে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে নেমেছিল দলটি। দুর্দান্ত এক একাদশ নিয়ে বেলো হরিজোন্তের মিনেইরো স্টেডিয়ামে জার্মানির মুখোমুখি হয়েছিল পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল। ফাইনাল থেকে মাত্র এক ম্যাচ দুরত্বে। গ্যালারির ৬২ হাজার সমর্থক আর বিশ্বজোড়া কোটি চোখ অপেক্ষায় ছিল জোগো বোনিতোর ছন্দ দেখার।কিন্তু হায়! সেদিনের সেই ব্রাজিল দল যেন অচেনা। ১৯৫০ সালে মারাকানা ট্র্যাজেডির দুর্নাম ঘোচাতে যে ম্যাচে সবটা নিংড়ে দেওয়ার কথা, সেদিনই কি না জার্মানি উল্টো শুষে নিল সেলেসাওদের সবটুকু রস! নেইমার ও থিয়াগো সিলভাবিহীন ব্রাজিলকে মনে হচ্ছিল পাড়ার কোনো দল, জার্মানি যাদের সঙ্গে মেতেছিল ছেলেখেলায়।১১ মিনিটে থমাস মুলারের গোল দিয়ে শুরু যান্ত্রিক জার্মানদের গোল উৎসব। ২৩ থেকে ২৯, মাত্র সাত মিনিট। যে সাত মিনিট কখনোই মনে রাখতে চাইবে না ব্রাজিলের ভক্তরা। মনে রাখতে না চাইলেও এরপর থেকে সাত আর পিছু ছাড়েনি তাদের।
২৩ মিনিটে জার্মান কিংবদন্তি মিরোস্লাভ ক্লোসার গোল। ২৪ ও ২৬ মিনিটে টনি ক্রুসের জোড়া লক্ষ্যভেদে ছিটকে পড়েন ডেভিড লুইজ, মার্সেলো, অস্কাররা। বিস্ময়ে হতভম্ব হয়ে পড়ে গোটা ফুটবল দুনিয়া। ২৯ মিনিটে সামি খেদিরার গোলের পর মনে হচ্ছিল, রক্ষণ বলে ফুটবলে কিছু নেই। পৃথিবীর সবচেয়ে সহজ কাজ ব্রাজিলের জালে বল জড়ানো। মাস্টারমাইন্ড কোচ লুইজ ফেলিপে স্কলারিও বুঝে উঠতে পারছিলেন না কী থেকে কী হয়ে গেল।
জার্মানি তখন কী ভেবেছিল, তা কেবল তারাই জানেন। তবে তাদের খেলা দেখে মনে হয়েছে, থাক! আর না। ছেড়ে দেই। প্রথমার্ধের শেষ ১৫ মিনিটে একাধিক সুযোগ পেয়েও কাজে লাগায়নির তারা। দ্বিতীয়ার্ধেও সুযোগ পেয়েছিল দলটি। আন্দ্রে শুর্লে ভাবলেন, আবার একটু আনন্দ করি। ৬৯ ও ৭৯ মিনিটে জোড়া গোল দিয়ে পূর্ণ করলেন সাত গোল।
ফুটবলে গোলটাই শেষ কথা। অথচ শেষ মুহূর্তে ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার অস্কারের গোলটি হয়ে রইল ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম মূলহীন এক গোল। তিনি নিজেও বোধহয় লজ্জা পেয়েছিলেন গোল দেওয়ার পর। আর ম্যাচ শেষে ডেভিড লুইজের নির্বাক সজল চোখের দিকে তাকানোই কঠিন হয়ে পড়েছিল।
আরেকটি ৮ জুলাই। পূরণ হলো ক্ষ্যাপাটে ম্যাচটির ১০ বছর। যার আগেরদিন অপয়া সাত (যদিও সাতকে সৌভাগ্যের প্রতীক ধরা হয়।প্রাচীনকাল থেকে মানুষের ধারণায় ১৩ সংখ্যাটি অশুভ কিছুর প্রতীক, আর ৭ সংখ্যাটি সৌভাগ্যের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে।এমনকি বিখ্যাত অনেক খেলোয়াড় সাত নম্বর জার্সি পরে খেলতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। এর প্রকৃত কারণ জানা না গেলেও এই ৭ সংখ্যাটিই যেন পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ব্রাজিলের জন্য আনলাকি।) ফিরে আসে কোপা আমেরিকা ২০২৪ সালেও।
গত ১০ বছর ধরে মজার ছলে বাংলাদেশি ফুটবল ভক্তরা ‘সেভেন আপ’ শব্দটি জুড়ে দিয়েছেন ব্রাজিলের নামের সঙ্গে। বোধকরি যতদিন ফুটবল থাকবে, সেভেন নামটি পানীয়ের বোতল ছেড়ে গড়াগড়ি খাবে সবুজ ঘাসেও। যেখানে বিব্রতকরভাবে জড়িয়েছে ব্রাজিলের নাম।
For more information
আরো দেখুন|
Summary
Article Name
ব্রাজিলের ‘সেভেন আপের’ এক দশক
Description
৮ জুলাই ২০১৪— ব্রাজিল বনাম জার্মানি ম্যাচের ফলাফল ৭-১।(বাংলাদেশি ফুটবল ভক্তরা ‘সেভেন আপ’ শব্দটি জুড়ে দিয়েছেন ব্রাজিলের নামের সঙ্গে) সেই রাত...
Author
sylheterawaz
Publisher Name
sylheterawaz
Publisher Logo