আওয়াজ ডেস্ক: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনের সময় সিলেটের বিশ্বনাথে অসহযোগ আন্দোলনের প্রথম দিন গত ৪ আগস্ট আল-হেরা শপিং সিটিতে ভাংচুর-লুটের ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার ১৪ দিন পর রোববার (১৮ আগস্ট) শপিং সিটির চেয়ারম্যান ছাদেকুর রহমান বাদী হয়ে ‘উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান, আইনজীবী’সহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের ৮৩ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ এবং আরোও ৫০/৬০ জনকে অজ্ঞাতনামা অভিযুক্ত করে মামলাটি দায়ের করেছেন।
বিশ্বনাথ পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও জানাইয়া গ্রামের আবুল কালামের পুত্র শামীম আহমদকে প্রধান অভিযুক্ত করে দায়ের করা মামলার অন্যান্য অভিযুক্তরা হলেন- মোল্লারগাঁও গ্রামের মৃত ময়না মিয়া পুত্র ফজর আলী (বিশ্বনাথ পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর), শাহজিরগাঁও গ্রামের মৃত আরজান আলীর পুত্র রফিক আলী (বিশ্বনাথ পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি), চান্দশীরকাপন গ্রামের সুনু মিয়ার পুত্র যুক্তরাজ্য প্রবাসী ছুরত আলী বাবুল, জানাইয়া গ্রামের ইউনুছ আলীর পুত্র রিপন আহমদ (ছাত্রলীগ নেতা), পূর্ব চান্দশীর কাপন গ্রামের রিয়াজ মিয়ার পুত্র সিরাজুল ইসলাম সিরাজ (উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক), সেনারগাঁও গ্রামের মৃত ইসকন্দর আলীর পুত্র আশিক আলী (উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য), চৌধুরীগাঁও গ্রামের ছোরাব আলীর পুত্র রাজু আহমদ খান (পৌর আওয়ামী লীগের সদস্য), শাহজিরগাঁও (দূর্গাপুর-কারিকোনা) গ্রামের আব্দুল মতিনের পুত্র ফারাবি ইমন ইসলাম (ছাত্রলীগ নেতা), শাহজিরগাঁও গ্রামের গৌছ মিয়ার পুত্র আব্দুল হক (যুবলীগ নেতা), শরিষপুর গ্রামের মৃত জয়দু মিয়ার পুত্র রফিক আলী (যুবলীগ নেতা), শাহজিরগাঁও গ্রামের সোনাফর আলীর পুত্র ফয়জুল ইসলাম জয় (উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহবায়ক), জানাইয়া গ্রামের মৃত আব্দুল কাদিরের পুত্র আবুল হোসেন, একই গ্রামের মৃত মবশ্বির আলীর পুত্র আজব আলী (পৌর আওয়ামী লীগের সদস্য), জাহারগাঁও গ্রামের ওয়ারিছ খানের পুত্র রুহেল খান (যুবলীগ নেতা), জানাইয়া গ্রামের আব্দুল খালিক মিয়ার পুত্র সুজেল আহমদ, বাইশঘর গ্রামের তজম্মুল আলীর পুত্র মো. জহির, জানাইয়া গ্রামের মারফত আলীর পুত্র আহমদ আলী, একই গ্রামের জুনাই, আব্দুল মালিকের পুত্র রাজন মিয়া (উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সম্পাদক), কাশিমপুর গ্রামের মৃত আবুল হোসেনের পুত্র আব্দুল হাকিম, জানাইয়া গ্রামের মারফত আলীর পুত্র সমর আলী, একই গ্রামের সমুজ আলীর পুত্র নাসির মিয়া (যুবলীগ নেতা), তেলিকোনা গ্রামের নূরুল ইসলামের পুত্র ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মুহিবুর রহমান সুইট (যুবলীগ নেতা), বিলপার গ্রামের আব্দুর রহমানের পুত্র অ্যাডভোকেট গিয়াস উদ্দিন (উপজেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক), জানাইয়া গ্রামের ছাত্তার মিয়ার পুত্র নাসির আহমদ রাজ, মুফতিরগাঁও গ্রামের ময়না মিয়ার পুত্র জাকির হোসেন মামুন (ছাত্রলীগ নেতা), বিশ্বনাথ পুরান বাজারের রতন মিয়ার পুত্র ফয়ছল মিয়া (স্বেচ্ছাসেবক লীগ), জানাইয়া গ্রামের সফিক মিয়ার পুত্র কামরান আহমদ (ছাত্রলীগ নেতা), একই গ্রামের মানিক মিয়ার পুত্র জুবেদ আহমদ আসলাম (ছাত্রলীগ নেতা), ময়না মিয়ার পুত্র নয়ন মিয়া, বিশ্বনাথ পুরান বাজারের শামীম আহমদের পুত্র আল-আমিন, সরুয়ালা গ্রামের আজিজুলের পুত্র নাহিদ আহমদ, গোয়াহরি গ্রামের নেছার আলীর পুত্র এনামুল হক সম্্রাট, হাবড়া গ্রামের আজফর আলীর পুত্র জিল্লুর রহমান, কামালপুর গ্রামের আব্দুল কাদিরের পুত্র মো. হিমেল, শাহজিরগাঁও গ্রামের মামুনের পুত্র শেখ সাদ্দাম, মোহাম্মদপুর গ্রামের সিরাজ আলীর পুত্র রাজন আলী, কাশিমপুর গ্রামের গৌছ মিয়ার পুত্র এনামুল ইসলাম (যুবলীগ নেতা), মোল্লারগাঁও গ্রামের মৃত: আব্দুল খালিকের পুত্র উজ্জল আহমদ (ছাত্রলীগ নেতা), ইলামেরগাঁও গ্রামের সিরাজ আলীর পুত্র ইব্রাহিম আলী (ছাত্রলীগ নেতা), সেনারগাঁও গ্রামের সাজই মিয়ার পুত্র সাদিক আহমদ, জানাইয়া গ্রামের চান্দ আলীর পুত্র জামাল আহমদ, চৌধুরীগাঁও গ্রামের ছোরাব আলী (উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি), শাহজিরগাঁও (দূর্গাপুর-কারিকোনা) গ্রামের মছদ্দর আলীর পুত্র আব্দুল মতিন (উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক), চৌধুরীগাঁও গ্রামের মৃত মরম আলীর পুত্র আবুল কাহার, দোহাল গ্রামের মজিদ মিয়ার পুত্র হোসাইন আহমদ, পাড়ুয়া গ্রামের আব্দুল হামিদের পুত্র সাইফুল ইসলাম (বিশ্বনাথ পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক), পূর্ব চান্দশীরকাপন গ্রামের তবারক আলীর পুত্র সিরাজুল ইসলাম রুকন, জানাইয়া গ্রামের মৃত সমর আলীর পুত্র কয়েস আহমদ (ছাত্রলীগ নেতা), একই গ্রামের আব্দুল হকের পুত্র ইসলাম আহমদ, আব্দুল ছাত্তারের পুত্র দিলোয়ার ফয়ছল, আলাল মিয়ার পুত্র সুহেদ আহমদ, আকরম আলীর পুত্র জয়নাল, শ্রীধরপুর গ্রামের রোকন আলীর পুত্র আব্দুল বাতিন (সিলেট ল’কলেজ ছাত্রলীগের সহ সভাপতি), একই গ্রামের শাহজাহান সিরাজের পুত্র রেজা মিয়া (ছাত্রলীগ নেতা), জানাইয়া গ্রামের মবশ্বির আলীর পুত্র সুন্দর আলী (উপজেলা শ্রমিক লীগের সহ সভাপতি), গন্ধারকাপন গ্রামের নেপুর আলীর পুত্র বাবুল মিয়া, জানাইয়া গ্রামের আব্দুল ছাত্তারের পুত্র সেবুল মিয়া, একই গ্রামের বাছা মিয়ার পুত্র খোকন মিয়া (যুবলীগ নেতা), মাসুক মিয়ার পুত্র সালমান, বিশ্বনাথ নতুুুন বাজারের হেলাল আহমদ (যুবলীগ নেতা), জানাইয়া গ্রামের সমুজ আলীর পুত্র আবুল মিয়া, একই গ্রামের মৃত আমির আলীর পুত্র মৌরশ আলী, মুফতিরগাঁও গ্রামের আইয়ুব আলীর পুত্র রাজন আহমদ অপু (যুবলীগ নেতা), কামালপুর গ্রামের তোরাব আলীর পুত্র রাসেল আলী (আওয়ামী লীগ নেতা), ধীতপুর গ্রামের আকরম আলীর পুত্র ফারুক মিয়া, কালীগঞ্জ বাজারের রুকন আলীর পুত্র মাসুম আহমদ, সেনারগাঁও গ্রামের জয়নাল আহমদ, রাজনগর গ্রামের জমির মিয়ার পুত্র আবিদুর রহমান (ছাত্রলীগ নেতা), গন্ধারকাপন গ্রামের কামরান আহমদ, বিশ্বনাথ টিএনটি রোডের শেখ জামালের পুত্র শেখ জামিল, চৌধুরীগাঁও গ্রামের তজম্মুল আলীর পুত্র জহির আহমদ, বিশ্বনাথ নতুন বাজারের তোবারক আলীর পুত্র আব্দুর রহমান, একই এলাকার হাবিবুর রহমান হাবিব, চান্দভরাং গ্রামের দবির মিয়ার পুত্র লোকমান মিয়া, সাবসেন গ্রামের মাহমদ আলীর পুত্র মাসুক মিয়া, শরিষপুর গ্রামের বাচ্চু মিয়ার পুত্র মাসুম, বড় খুরমা গ্রামের আলমাস আলীর পুত্র রেহান মিয়া, একই গ্রামের জহুর আলীর পুত্র রুকন নিয়াজি, দশপাইকা (ধনপুর) গ্রামের ওয়াহাব আলী (আওয়ামী লীগ নেতা), শাহজিরগাঁও গ্রামের সুন্দর আলীর পুত্র ফয়ছল, বিশ্বনাথ বাজারের মৃত তুতু মিয়ার পুত্র রুপা মিয়া।
মামলার লিখিত অভিযোগে বাদী বাদী উল্লেখ করেছেন ঘটনার দিন (৪ আগস্ট) সারা দেশেরন্যায় বিশ্বনাথে ছাত্র-জনতার শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে প্রতিহত করার জন্য অভিযুক্তরা বে-আইনীভাবে মিলিত হয়ে লাঠি-সোটা, রামদা-রড, জিআই পাইভ, হকিস্টিক ইত্যাদি অস্ত্র-সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে থানার সম্মুখে অবস্থিত মুসলিম সুইট মিট হতে বাসিয়া সেতুর উপর অবস্থান করতে থাকে। এর একপর্যায়ে সকাল ১১.৪৫টার দিকে তারা মিছিল সহকারে বাসিয়া সেতু থেকে আল-হেরা শপিং সিটির সামনে গিয়ে জনমনে ত্রাস সৃস্টি করে বিশ্ঙ্খৃলা ও অরাজক পরিবেশ সৃস্টি করার জন্য আল-হেরা শপিং সিটিতে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে মার্কেটের সামনের থাই গ্লাস ভাংচুর করে।
এসময় মার্কেটের ব্যবসায়ীরা বাঁধা প্রদান করলে অভিযুক্তরা জোরপূর্বক আল-হেরা শপিং সিটির নিচ তলায় থাকা তান্দুরী রেষ্টুরেন্টে প্রবেশ করে চেয়ার-টেবিল গ্লাসসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাংচুর করে রেস্টুরেস্টের পরিচালক সফিউল ইসলাম মামুনকে মারধর করে ক্যাশে থাকা নগদ ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এরপর মার্কেট পরিচালনা কমিটির অফিস ভাংচুর করে অফিসের ক্যাশ বাক্সে থাকা জুলাই-২৪ মাসের বিভিন্ন দোকানের ভাড়া, ইলেকট্রিক বিল, জেনারেটর বিল বাবদ উত্তেলিত নগদ প্রায় ২৪ লাখ ৩৮ হাজার টাকা এবং অফিসে থাকা মূল্যবান দলিলাদি লুট করে নিয়ে যায়। এছাড়া অভিযুক্তরা মার্কেটের ভিতরে প্রবেশ করে বিভিন্ন দোকান ভাংচুর ও নগদ টাকা লুট করেছেন বলে মামলার বাদী লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেছেন।
মামলা দায়েরের সত্যতা স্বীকার করে বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) রমা প্রসাদ চক্রবর্তী বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে ঘটনার সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে পুলিশী অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
For more information
আরো দেখুন|
Summary
Article Name
বিশ্বনাথে ১৪৩ আ.লীগের নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা
Description
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনের সময় সিলেটের বিশ্বনাথে অসহযোগ আন্দোলনের প্রথম দিন গত ৪ আগস্ট আল-হেরা শপিং সিটিতে ভাংচুর-লুটের...
Author
sylheterawaz
Publisher Name
sylheterawaz
Publisher Logo