সিলেট ১১ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৮শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১২ই শাবান, ১৪৪৬ হিজরি

সিলেটের টিলাগড় ইকোপার্কে তত্ত্বাবধানের অভাবে মারা গেছে অর্ধেক প্রাণী

admin
প্রকাশিত জানুয়ারি ৭, ২০২৫, ১১:২৩ পূর্বাহ্ণ
সিলেটের টিলাগড় ইকোপার্কে তত্ত্বাবধানের অভাবে মারা গেছে অর্ধেক প্রাণী

আওয়াজ ডেস্ক: সিলেটের টিলাগড় ইকোপার্কে গড়ে তোলা হয় বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্র। দেশিবিদেশি পশু-পাখি এনে রাখা হয় এই সংরক্ষণ কেন্দ্রে। চিড়িয়াখানা হিসেবে খ্যাতি পাওয়া এই ইকোপার্ক ও প্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্র বেশ সাড়া ফেলে। অপরিকল্পিতভাবে বিদেশি পশুপাখি সংরক্ষণ, রক্ষণাবেক্ষণ, তত্ত্বাবধান ও চিকিৎসার অভাবে শূন্য হয়ে পড়েছে চিড়িয়াখানাটি। জেব্রা, ময়ূর, লাভবার্ডসহ বিদেশি অনেক প্রাণী মারা গেছে। শুরুতে ১১ প্রজাতির ৮৮টি প্রাণী থাকলেও এখন আছে ৮ প্রজাতির ৩৯টি। এগুলো দ্রুততম সময়ের মধ্যে স্থানান্তরের সুপারিশ করে চিঠি দিয়েছে বন বিভাগ।

সূত্র জানায়, ২০০৬ সালে ১১২ একর জায়গা নিয়ে সিলেট নগরীর টিলাগড়ে গড়ে তোলা হয় টিলাগড় ইকোপার্ক। উন্মুক্তভাবে বনটিতে উড়ে বেড়াত বনমোরগ, ময়না, টিয়া, ঘুঘু, মাণিকজোড়, কালিম, কাঠঠোকরা, হুতুমপেঁচাসহ বিভিন্ন জাতের পাখি। দেখা মিলত বানর, শূকর, খেঁকশিয়াল, বনবিড়াল, মেছোবাঘ, খরগোশ, কাঠবিড়ালী ও বেজির। নানা জাতের সরীসৃপেরও অভয়ারণ্য এই ইকোপার্ক।

২০১৮ সালে ইকোপার্কের ভিতর গড়ে তোলা হয় ‘বন্যপ্রাণি সংরক্ষণ কেন্দ্র’ নামে মিনি চিড়িয়াখানা। একই বছরের অক্টোবরে গাজীপুরের সাফারি পার্ক থেকে আনা হয় ১১ প্রজাতির ৮৮টি প্রাণি। বেশির ভাগই ছিল বিদেশি। ৯টি হরিণ, ১৮টি কইকার্প, দুটি গ্রে প্যারট, চারটি খরগোশ, লাভবার্ড ৩০টি, ময়ূর ১২, জেব্রা ২, সিলভার ফিজেন্ট ৩, গোল্ডেন ফিজেন্ট ১, সান কনুর ৪ ও মেকাউ তিনটি। সংরক্ষণ কেন্দ্রটিতে চিকিৎসা কেন্দ্র স্থাপন কিংবা চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হয়নি।

এক বছরের মাথায় মরতে থাকে বিদেশি পশুপাখি। শৈত্যপ্রবাহের সময় এক দিনে মারা যায় ৩০টি লাভবার্ড। বর্তমানে এই মিনি চিড়িয়াখানায় রয়েছে ১৯টি হরিণ, গ্রে প্যারট ৪, ময়ূর ৩, সিলভার ফিজেন্ট ১, মেকাউ ৩, রঙিন কার্প ৬, অজগর সাপ ১ ও কালিম দুটি। চিকিৎসা ও পরিচর্যার অভাবে মারা গেছে জেব্রা, ফিজেন্ট বার্ড, ময়ূর, সানকনুরসহ আরও কয়েক প্রজাতির প্রাণী।

কেন্দ্রটি ইজারা দিয়ে রক্ষণাবেক্ষণ করা হতো। ইজারাদার প্রাণীর খাঁচা পরিষ্কার ও নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন। ৫ আগস্টের পর ইজারাদার পালিয়ে যাওয়ায় অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে আছে প্রাণীগুলো।

সিলেটের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা হুমায়ূন কবীর সিলেটের একটি স্থানীয় অনলাইন সংবাদমাধ্যমকে জানান, বিদেশি পশুপাখি এখানকার আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারেনি। প্রাণীর চিকিৎসার জন্য বন বিভাগের চিকিৎসা কেন্দ্র কিংবা চিকিৎসকও নেই। কোনো প্রাণী অসুস্থ হলে সাহায্য নিতে হয় সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি বিভাগের চিকিৎসকদের। ৫ আগস্টের পর থেকে প্রাণীগুলো অনেকটা অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে। চিকিৎসা ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা না হওয়ার আগ পর্যন্ত প্রাণীগুলোকে সাফারি পার্কে স্থানান্তরের আবেদন জানানো হয়েছে।

For more information

আরো দেখুন