স্টাফ রিপোর্টার: বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তোপের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার দেশত্যাগে সরকারের পতন ঘটে। এর আগে-পরেই দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আবাসিক হলের পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ হারায় আওয়ামীলীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগ।
ফলে দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মতোই আবাসিক হলের নিয়ন্ত্রণ হারায় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এর আগে ছেলেদের ৩টি আবাসিক হলে প্রায় ৯৫ শতাংশ সিট ছাত্রলীগের নিয়ন্ত্রণে ছিল।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সরকার পতনের পর হলের নিয়ন্ত্রণ হারালেও নিজেদের আদিপত্য ধরে রাখতে নতুন পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। এতে হলের সিট দখলের পাঁয়তারা করতে সক্রিয় হয়ে উঠেছে ছাত্রলীগের ‘বি’ টিমের কর্মীরা। এ টিমের সদস্য হিসেবে যারা রয়েছে সকলে পূর্বে ছাত্রলীগের প্রভাব বিস্তার করা, মিছিল-মিটিংসহ গ্রুপের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ছিলেন বলে জানা গেছে। ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্টতার অনেক প্রমাণ প্রতিবেদকের হাতে এসেছে।
ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, কোটা সংস্কার আন্দোলনের শুরু থেকে হলে থাকা কিছু ছাত্রলীগ কর্মী সক্রিয় ছিলেন। তবে পদধারীসহ অধিকাংশ হলে থাকা কর্মী বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে সংহতি জানায়নি। তবে সরকার পতনের পর হল খুলে দিলে তারা আবারও নিজেদের রুমে উঠতে শুরু করে। এতে পূর্ব থেকেই হলে থাকা ছাত্রলীগ কর্মীরা একটু একটু করে আবারো নিজেদের অবস্থান পাকাপোক্ত করতে শুরু করে। তাই হলগুলোতে আদিপত্য ধরে রাখতে সাধারণ শিক্ষার্থী পরিচয়ে হলে থাকছেন তারা, করছেন হল কেন্দ্রিক বিভিন্ন মিটিংও।
হল প্রশাসন না থাকায় নিজেরা নিজেরা সিদ্ধান্ত নিয়ে হলের রুমগুলোতে গিয়ে খবর নিচ্ছে কারা ভর্তি আছে আর কারা নেই। তাতে অনেক ছাত্রলীগ কর্মীর বিরুদ্ধে কট্টর ছাত্রলীগ ও পূর্বের হয়রানির অভিযোগ এনে তাদেরকে রুম থেকে বের করে দিচ্ছে, কাউকে দিচ্ছে আল্টিমেটামও। তবে নিজেদের অস্তিত্ব ধরে রাখতে বিতাড়িত নেতাদের মদদে ছাত্রলীগের ‘বি’ টিম দিয়ে এসব কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে বলে মনে করছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
তারা জানায়, বর্তমানে আবাসিক হলের বিষয়ে যারা কথা বলছে, তারাই একটা সময় ছাত্রলীগের ছত্রছায়ায় নানা অপকর্মে জড়িয়েছে। এখন সাধারণ শিক্ষার্থী পরিচয়ে নিজেদের সংঘবদ্ধ করার চেষ্টা করছে। তাদের প্রতিহত করা না গেলে ক্যাম্পাসে আবারো ফ্যাসিস্টদের নৈরাজ্য সৃষ্টি হবে বলে মনে করছেন তারা।
এ বিষয়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শাবির সমন্বয়ক দেলওয়ার হোসেন শিশির বলেন, আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে হলের বিষয়ে এরকম কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। এই কাজগুলো যারা করছে আন্দোলনের সাথে তাদের কোনো সম্পর্ক আছে বলে মনে হয় না। তাদের একাজগুলো আমরাও অবগত না, হয়তো ছাত্রলীগের কোনো এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে এসব কর্মকাণ্ড পরিচালিত করছে। এখন নিজেদের অস্থিত্ব ঠিকিয়ে রাখতে সাধারণ শিক্ষার্থী পরিচয় দিচ্ছে।
এমন কর্মকাণ্ড সম্পর্কে জানতে একাধিক ছাত্রলীগের পদধারী নেতাদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাদের কাউকে পাওয়া যায়নি।
For more information
আরো দেখুন|
Summary
Article Name
শাবির হল থেকে বিতাড়িত ছাত্রলীগ, আদিপত্য বিস্তারে নতুন পরিকল্পনা
Description
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তোপের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার দেশত্যাগে সরকারের পতন ঘটে। এর আগে-পরেই দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে...
Author
sylheterawaz
Publisher Name
sylheterawaz
Publisher Logo