কোম্পানীগঞ্জ প্রতিনিধি: দেশের অন্যতম সৌন্দর্যের লীলাভূমি সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সাদাপাথরে চলছে হরিলুট। সোমবার সন্ধ্যা থেকে শত শত নৌকা দিয়ে সাদাপাথর লুট করতে দেখা যায়। মঙ্গলবার দুপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রজনতা সাদাপাথর লুটপাটে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে কিছু নৌকা সেখান থেকে সরিয়ে দেয়।
স্থানীয়রা জানান, সরকার পতনের পর কোন নিরাপত্তা না থাকায় সাদাপাথর লুটপাট শুরু হয়। প্রথমে কাঠের নৌকা দিয়ে পাথর লুট হলেও পরে স্টিলের নৌকা নিয়ে আসেন লুটপাটকারীরা। লুটপাটের এই পাথর নদীপথ দিয়ে চলে যাচ্ছে ছাতক আর সড়ক পথে যায় ধোপাগুল।
হাসান নামের এক শ্রমিক জানান, এই পাথর আনার জন্য কত অপেক্ষা করেছি আমরা কিন্তু প্রশাসনের বাধায় পারিনি। আজ মনে হচ্ছে ১৫ বছর আগের ধলাই নদী যেমন ছিল তেমন। শ্রমিকরা বিনা বাধায় পাথর নিয়ে আসছে।
এদিকে, দুপুর ১টায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্রজনতা সাদাপাথর লুটপাট বন্ধে লাঠি হাতে সাঁড়াশি অভিযান চালায়। ঘন্টাখানেক লুটপাটকারীদের সাথে বাকবিতন্ডা করে তাদেরকে সাদাপাথর থেকে সরিয়ে দেয়। তবে এর কিছুক্ষণ পর আবারও শুরু হয় পাথর লুটপাট।
বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের কোম্পানীগঞ্জের সমন্বয়ক আদনান সোহাগ ও মইনুল ইসলাম জানান, দেশের সম্পদ রক্ষায় আমরা দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছি। যেখানেই আমরা ভাঙ্গচুর বা লুটপাটের সংবাদ পাচ্ছি সেখানেই প্রতিরোধ করার জন্য ছাত্রজনতাদের নিয়ে যাচ্ছি। মঙ্গলবার দুপুরে সাদাপাথর লুটপাট বন্ধে আমরা বেশ কয়েকজন সেখানে যাই। এসময় শত শত নৌকায় করে পাথর লুটপাট হচ্ছিল। আমরা সেখান থেকে নৌকাগুলো সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করি। এক পর্যায়ে সব নৌকা সাদাপাথর থেকে সরে যায়। কিন্তু এর কিছুক্ষণ পর আবার তারা লুটপাট শুরু করে।
এদিকে সাদাপাথর পর্যটন বাজারের দোকানপাট পেলুডার দিয়ে গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় ভোলাগঞ্জ ১০নম্বর এলাকায় পর্যটন বাজারে এ ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়। এ সময় ৩/৪টি রেস্টুরেন্টের সকল মালামাল নিয়ে যায় দূর্বৃত্তরা। এ ছাড়া অন্যান্য সকল দোকানের মালামাল ১ ঘন্টার ভিতর নিয়ে যেতে নির্দেশ দেওয়া হয়। তখন দোকানীরা তাড়াহুড়ো করে তাদের দোকানের ভিতরে থাকা সকল মালামাল নিয়ে যায়। এতে করে প্রতিটি দোকানের অনেক মালামালের ক্ষয়ক্ষতি হয়। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন তাদের প্রায় ২ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পর্যটন বাজারের জিরো পয়েন্ট, মেঘের বাড়ি, শাহ পরান, জয় বাংলা ও সেই স্বাদ রেস্টুরেন্টে ভাঙ্গচুর করা হয়েছে। এছাড়া ৪/৫টি কসমেটিকসের দোকানও ভাঙ্গচুর করা হয়।
মেঘের বাড়ি রেস্টুরেন্টের মালিক সফাতউল্লাহ বলেন, সাদাপাথর পর্যটন কেন্দ্র আমার মেঘের বাড়ি রেষ্টুরেন্টে কিছু সন্ত্রাসী লুটপাট ও ধ্বংসজজ্ঞ চালিয়েছে। দোকানের ভিতরে থাকা ১টি এসি ৩টি ফ্রিজ ২০০ চেয়ার ২০টি টেবিল ও ২টি জেনারেটর সহ সকল আসবাবপত্র লুটপাট করে নিয়ে যায়। এতে আমার প্রায় ৩০ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।