আওয়াজ প্রতিবেদক:: পদত্যাগ না করেই সিলেট-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে প্রতীক বরাদ্দ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন বিশ্বনাথের আলোচিত মেয়র মুহিবুর রহমান। তিনি উচ্চ আদালতের নির্দেশে প্রার্থিতা ফিরে পেলেও প্রতীক পাচ্ছেন না। আর এই প্রতীক পাওয়ার জন্য তিনি সিলেটের জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে অবস্থান ও বিশ্বনাথে মানবন্ধন করেছেন।প্রতীক না পাওয়া পর্যন্ত তিনি এই আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুমকিও দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তার অবস্থানের পর বেলা আড়াইটার দিকে বিশ্বনাথের বাসিয়া নদীর উপর গিয়ে এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে এই হুমকি দেন।
মানবন্ধনে প্রার্থী মুহিবুর রহমান বলেন, এই মুহুর্তে অশান্তির সৃষ্টি করছে নির্বাচন কমিশন। আর এই নির্বাচন কমিশন কোনো বিশেষ প্রার্থীকে জয়যুক্ত করার জন্য আমাদেরকে নির্বাচনের মাঠ থেকে সরিয়ে দেয়ার পায়তারা করছে। গত ২৪ ডিসেম্বর হাইকোর্ট আমাদের পক্ষে রায় দিয়ে প্রার্থীতা বৈধ ঘোষণা করেছেন। আমি এর আগেও ৮/১০টি নির্বাচন করেছি, হাইকোর্টে গিয়েছি, রায় পাওয়ার সাথে সাথে সার্টিফাই কপি দেয়ার পর পরই প্রতীক পেয়েছি। এই নির্বাচনে আমরা ২৪ ডিসেম্বর রায় পাওয়ার পরই হাইকোর্টের সার্টিফাই কপি নির্বাচন কমিশনকে পৌঁছে দিয়েছি। আমাদের কাছে সেই রশিদও আছে। পরদিন ২৫ ডিসেম্বর ডিসি অফিসেও আমরা রায়ের সার্টিফাই কপি পৌঁছে দিয়েছি। কিন্তু তখন ডিসি বলেছেন সার্টিফাই কপি নয়, হার্ড কপি দিতে হবে। আমরা পরদিন ২৬ ডিসেম্বর ফ্লাইটে করে ঢাকা থেকে সেই হার্ড কপিও এনে দিয়েছি। তার পরও যখন প্রতীক বরাদ্দ পাইনি তখন ডিসির দ্বারস্থ হলাম। এসময় তিনি বললেন নির্বাচন কমিশন থেকে ক্লিয়ারেন্স আসতে হবে।
তিনি আমদেরকে আসস্থ করে বৃহস্পতিবার যাওয়ার জন্য বলেন। আমরা তার কথামতো বৃহস্পতিবার সেখানে গেলাম।
প্রতীকের জন্য যাওয়ার পর তিনি একটি চিঠি দেখিয়ে বললেন যে আমাদের সেই হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন। এটা হচ্ছে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক হাইকোর্টকে অবমাননা করা। আমরা আমাদের প্রতীক পাওয়ার সংগ্রাম শান্তিপূর্ণ ভাবে অব্যাহত রাখবো। তারা যদি আমাদেরকে বাদ দিয়ে নির্বাচন করতে চায় তাহলে ভোটারদেরকে বলবো নির্বাচনের দিন যেনো একজন ভোটারও কেন্দ্রতে না যায়। শুক্রবার থেকে নতুন কর্মসূচি দেবো। প্রতীক না পাওয়া পর্যন্ত এই সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে বলে হুসিয়ারি দেন।
মুহিবুর রহমান নির্বাচনের নির্দেশনা অমান্য করে মেয়র পদ থেকে পদত্যাগ না করে এই আসনে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী হয়ে মনোনয়ন দাখিল করেন। ফলে ৩ ডিসেম্বর তার মনোনয়ন বাতিল করেন রিটার্ণিং কর্মকর্তা। পরে নির্বাচন কমিশনে আপিল করলে ১৬ ডিসেম্বর তার সেই আবেদন খারিজ করেন নির্বাচন কমিশন। এর পর তিনি ১৭ডিসেম্বর হাইকোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করেন। গত ২৪ ডিসেম্বর হাইকোর্ট তার মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত তিনি প্রতীক বরাদ্দ না পাওয়ায় এই আন্দোলন শুরু করেছেন।
তবে এর ভেতরে ট্রাক প্রতীক দিয়ে ব্যানার-পোস্টার ছাপিয়ে প্রচারণা শুরু করায় তাকে ৫হাজার টাকা জরিমানাও গুনতে হয়েছে। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে এই জরিমানা করেন বিশ্বনাথ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো.সম্রাট হোসেন।