সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কে বাজে পারফরমেন্সের পর তার ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগের মধ্যেই প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বুধবার সিনিয়র ডেমোক্র্যাট নেতা ও কর্মকর্তাদের আশ্বস্ত করার কাজ শুরু করেছেন।
নভেম্বরের নির্বাচনে তার জায়গায় ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস আসতে পারেন এমন গুঞ্জনের মধ্যে তিনি হোয়াইট হাউজে কমলা হ্যারিসের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার মধ্যাহ্ন ভোজে অংশ নিয়েছেন।
এরপর তারা ফোনে দলের এক প্রচারণায় অংশ নেন যেখানে মি. বাইডেন পরিষ্কার করেছেন যে তিনি লড়াইয়ে আছেন এবং মিস হ্যারিসও তার সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন।
ট্রাম্পের সাথে বিতর্কের পর প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছিলো যে ৮১ বছর বয়স্ক বাইডেন প্রচারণা অব্যাহত রাখবেন কি না। বিতর্কে বারবার খেই হারানো, দুর্বল কণ্ঠস্বর এবং তার কিছু উত্তর বোঝাই কষ্টকর ছিল। এটি দলের মধ্যে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য তার ফিটনেস এবং নির্বাচনে জেতার সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি করে।
এরপর জনমত জরিপগুলোতে যখন দেখা যায় তার রিপাবলিকান প্রতিদ্বন্দ্বীর সাথে পার্থক্য বাড়ছে তখন লড়াই থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য তার ওপর চাপ বাড়তে
ডেমোক্র্যাট পার্টির কিছু ডোনার এবং আইনপ্রণেতা প্রকাশ্যে প্রেসিডেন্টকে সরে দাঁড়ানোর যে আহবান জানিয়েছেন সেটি নির্বাচনের জন্য ক্ষতিকর হয়ে উঠেছে।
ম্যাসাচুসেটস ভিত্তিক ভারতীয়-আমেরিকান শিল্পপতি রামেশ কাপুর ডেমোক্র্যাট পার্টির জন্য তহবিল সংগ্রহের কাজ করছেন ১৯৮৮ সাল থেকে।
কংগ্রেসের দুই ডেমোক্র্যাটও দলের মনোনয়নের পরিবর্তনের আহবান জানিয়েছেন। সবশেষ আরিজোনার রাউল গ্রিজালভা নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেছেন যে যে ডেমোক্র্যাটদের অন্যদিকে তাকানোর সময় এটা।
এ সত্ত্বেও হোয়াইট হাউজ ও বাইডেন প্রচারণা দল এসব খবরাখবর প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন তিনি আগামী পাঁচই নভেম্বর দ্বিতীয়বারের মতো ট্রাম্পকে হারাতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
নিউইয়র্ক টাইমস ও সিএনএন বুধবার সূত্র উল্লেখ না করে বলেছে যে মি. বাইডেন লড়াইয়ে থাকবেন কি না তা পর্যালোচনা করে দেখেছেন বলে তার এক মিত্রকে জানিয়েছেন।
উভয় সংবাদে বলা হয় তিনি তার সহযোগীদের বলেছেন যে তার পুনর্নির্বাচন যে বিপদে পড়েছে তা নিয়ে তিনি সচেতন এবং উইসকনসিনে সমাবেশ ও এবিসি নিউজের সাথে সাক্ষাৎকার তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
একজন মুখপাত্র অবশ্য এসব রিপোর্ট ‘সর্বৈব মিথ্যা’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন। এরপর হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি কারিন জিন পিয়ারে নির্বাচনে লড়াইয়ে মি. বাইডেনের থাকা নিয়ে অনেক প্রশ্নের মুখে পড়েন।
তিনি বলেন খবরগুলো সত্যি নয়। “আমরা প্রেসিডেন্টের কাছে জানতে চেয়েছি…তিনি সরাসরি জবাব দিয়েছেন এবং বলেছেন যে ‘না’, এটা পুরোপুরি মিথ্যা। এটাই সরাসরি তার কাছ থেকে এসেছে”।
মি. বাইডেনের সারাদেশে কুড়ি জন ডেমোক্র্যাট গভর্নরের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন। এর মধ্যে আছেন ক্যালিফোর্নিয়ার গ্যাভিন নিউসম ও মিশিগানের গ্রেচেন হুইটমার। মি. বাইডেন সরে দাঁড়ালে তাদের উভয়েরই সম্ভাব্য বিকল্প হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে মনে করা হয়।
“প্রেসিডেন্ট সবসময় আমাদের সমর্থন দিয়েছেন,আমরাও একইভাবে তাকে সমর্থন দিচ্ছি,” ম্যারিল্যান্ডের গভর্নর সাংবাদিকদের বলেছেন।
নিউইয়র্ক গভর্নর ক্যাথি হোকল বলেছেন দুই ডজন গভর্নর প্রেসিডেন্টের সাথে সাক্ষাৎ করে তাদের সমর্থন জানিয়েছেন এবং মি. বাইডেন বলেছেন তিনি ‘তিনি জয়ের জন্যই আছেন’।
তবে মিজ হ্যারিস এখনো সবচেয়ে সম্ভাব্য বিকল্প হিসেবে বিবেচিত হচ্ছেন। তার সমর্থক কম হলেও ট্রাম্পের সাথে বাইডেনের বিতর্ক বিপর্যয়ের পর দলের মধ্যে তার সমর্থন বাড়ছে।
ওই বিতর্কের পর সিএনএনকে দেয়া তাৎক্ষণিক সাক্ষাৎকারে তিনি প্রেসিডেন্টের প্রতি তার পূর্ণ সমর্থন প্রকাশ করেছেন।
“তিনি সবসময় প্রেসিডেন্টের ভালো পার্টনার হতে মনোযোগী,” বলছিলেন মিজ হ্যারিসের কমিউনিকেশন ডিরেক্টর জামাল সিমন্স।
ডেমোক্র্যাট ন্যাশনাল কমিটির সদস্যরা অগাস্টে দলের কনভেনশনে দলীয় প্রার্থীকে আনুষ্ঠানিক মনোনয়ন দেবেন এবং এরপরই সারাদেশ ব্যালট পেপারে তার নাম আসবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সদস্য বলেছেন মি. বাইডেন অনুপযোগী হলে ভাইস প্রেসিডেন্টকে মনোনয়ন দেয়া উচিত। “কনভেনশনে কথা বললে সেটা একটা নৈরাজ্যে রূপ নেবে যা নভেম্বরের নির্বাচনে ক্ষতি করবে”।
ওয়াশিংটন পোস্টের এক রিপোর্টে বলা হয়েছে যে মি বাইডেন ও তার টিম স্বীকার করছে যে সামনের দিনগুলোতে বাইডেনকে তার ফিটনেসের প্রমাণ দিতে হবে। এ সপ্তাহের শেষে তিনি উইসকনসিন ও ফিলাডেলফিয়াতে যাবেন।
For more information
আরো দেখুন|
Summary
Article Name
সরে যাওয়ার চাপ বাড়লেও বাইডেন বললেন 'আমি রাজি না'
Description
সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কে বাজে পারফরমেন্সের পর তার ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগের মধ্যেই প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বুধবার সিনিয়র ডেমোক্র্যাট নেতা ও কর্মকর্তাদের আশ্বস্ত করার কাজ শুরু করেছেন।
Author
sylheterawaz
Publisher Name
sylheterawaz
Publisher Logo