সিলেট ১৩ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৯শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৩ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি

অর্থ পাচার বেড়েছে, কমেছে প্রবাসী আয়

admin
প্রকাশিত অক্টোবর ২, ২০২৩, ০৬:৪৮ পূর্বাহ্ণ
অর্থ পাচার বেড়েছে, কমেছে প্রবাসী আয়
গত ৪১ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন প্রবাসী আয় এসেছে গত সেপ্টেম্বর মাসে—পরিমাণ ছিল ১৩৪ কোটি ৩৬ লাখ ডলার।

আওয়াজ ডেক্স:

ডলার–সংকটের সময় প্রবাসী আয়ে বড় ধাক্কা এসেছে। গত সাড়ে তিন বছর বা ৪১ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন প্রবাসী আয় এসেছে বিদায় নেওয়া সেপ্টেম্বর মাসে। গত মাসে প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স এসেছে ১৩৪ কোটি ৩৬ লাখ ৬০ হাজার ডলার। এর আগে ২০২০ সালের এপ্রিলে এসেছিল ১০৯ কোটি ২৯ লাখ ৬০ হাজার ডলার।

দেশের বৈদেশিক লেনদেনের ঘাটতি মিটিয়ে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ানোর ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উৎস হচ্ছে প্রবাসী আয়। রপ্তানি আয় বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের ক্ষেত্রে একটি বড় উৎস হলেও বাংলাদেশে আমদানি ব্যয় বেশি। ফলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বড় ঘাটতি থেকে যায়। বাকি দুই প্রধান উৎসের মধ্যে বৈদেশিক বিনিয়োগের অবদান সামান্য, বৈদেশিক ঋণও আসছে কম। এ রকম এক পরিস্থিতিতে প্রবাসী আয় ধারাবাহিকভাবে কমতে থাকায় বৈদেশিক মুদ্রার মজুতের ওপরও চাপ বাড়ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অর্থ পাচার বেড়ে যাওয়ার কারণেই প্রবাসী আয় কমে যাচ্ছে। ব্যাংকের চেয়ে খোলাবাজারে ডলারের হার বেশি কারণে হুন্ডির প্রসার বেড়েছে, এতে অর্থ পাচার করাও সহজ হচ্ছে। নির্বাচন সামনে রেখে অর্থ পাচারের ঘটনা বাড়ছে বলেও মনে করা হচ্ছে। পাশাপাশি গত মাসে বাংলাদেশ বেশি দামে প্রবাসী আয় কেনার বিষয়ে অনুসন্ধান ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার কারণেও ব্যাংকগুলো প্রবাসী আয় কেনার আগ্রাসী মনোভাব থেকে সরে এসেছে। এর প্রভাবও পড়েছে প্রবাসী আয়ে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য বলছে, আইএমএফের হিসাবপদ্ধতি বিপিএম ৬ অনুযায়ী বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন ২১ বিলিয়ন ডলারের কিছু বেশি (২ হাজার ১১৫ কোটি ৪৭ লাখ ৯০ হাজার ডলার)। আর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিজস্ব হিসাব পদ্ধতি অনুযায়ী, বর্তমানে রিজার্ভ ২ হাজার ৭০৫ কোটি ৭৪ লাখ ৭০ হাজার ডলার। ২০২১ সালে এই রিজার্ভ ছিল ৪৮ বিলিয়ন বা ৪ হাজার ৮০০ কোটি ডলারে উঠেছিল।

জানা গেছে, গত সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম ২০ দিনেই বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যায় ১৬২ কোটি মার্কিন ডলার। আর এর পরের সাত দিনে কমেছিল আরও ৩০ কোটি ডলার। একই সময় পাল্লা দিয়ে কমেছে প্রবাসী আয়। আবার সেপ্টেম্বর মাসে রপ্তানি আয়ও কমেছে আগের মাসের তুলনায় ৯ শতাংশের বেশি। এসব কারণেই রিজার্ভ কেবল কমছেই।

বেসরকারি মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান এ নিয়ে প্রথম আলোকে বলেন, বর্তমানে ব্যাংকের চেয়ে খোলাবাজারে ডলারের পার্থক্য অনেক বেশি। এ কারণে বৈধ পথের চেয়ে অবৈধ পথে প্রবাসী আয় আসা বেড়ে গেছে। এ ছাড়া নির্বাচন সামনে রেখে অর্থ পাচারের ঘটনাও বেড়েছে। এর ফলে বিদেশ থেকে প্রবাসীরা যে ডলার পাঠাচ্ছেন, তা আর দেশে আসছে না। কারণ, সেখানে ডলারের চাহিদা বেড়ে গেছে। যারা পাচারকারী, তারা দেশে টাকায় অর্থ পরিশোধ করছে আর বিদেশ থেকে ডলার সংগ্রহ করছে। এ চাহিদা কমানো না গেলে দেশে ডলার আসা বাড়বে না।