সিলেটের গোলাপগঞ্জে গুলিতে পৃথক স্থানে তিনজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে পুলিশ সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেনি। রবিবার (৪ আগস্ট) বেলা আড়াইটার দিকে গোলাপগঞ্জ পৌর এলাকার ধারাবহরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে দুজন ও এর আগে ঢাকা দক্ষিণ এলাকায় একজন নিহতের ঘটনা ঘটে।
দুজনের মৃত্যুর বিষয়টি সিলেটভিউ-কে নিশ্চিত করেছেন গোলাপগঞ্জ উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডা. শাহিন আহমদ। তারা হলেন- ধারাবহর গ্রামের মো. মকবুল আলীর ছেলে ব্যবসায়ী তাজ উদ্দিন (৪৩) ও উপজেলার শিলঘাটের বাসিন্দা সানি আহমদ (১৮)।
এর আগে সংঘর্ষকালে গুলিমে নাজমুল ইসলাম। তিনি উপজেলার নিশ্চিন্তপুর গ্রামের তৈয়ব আলীর ছেলে। তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গোলাপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সুদর্শন সেন।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, দুপুরে গোলাপগঞ্জের ঢাকাদক্ষিণ ডিগ্রি কলেজের সামনে থেকে ছাত্র-জনতা জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। এসময় তাদের সরিয়ে দিতে চায় পুলিশ। এসময় সেখাবে বিজিবিও উপস্থিত ছিলো। একপর্যায়ে পুলিশ ও বিজিবির সঙ্গে ছাত্র-জনতার তুমুল সংঘর্ষ শুরু হয়। বিভিন্ন মসজিদে ঘোষণা দিয়ে এসময় এলাকাবাসীও সংঘর্ষে জড়িত হন। প্রায় দুই ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষে ছাত্র-জনতা ও এলাকাবাসী পুলিশ-বিজির দিকে ইট-পাটকেল ছুঁড়ে এবং পুলিশ-বিজিবি গুলি, টিয়ার সেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করতে থাকে। এক পর্যায়ে পুলিশ ও বিজিবি পিছু হটতে বাধ্য হয়।
এক পর্যায়ে সংঘর্ষ গোলাপগঞ্জ পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। বেলা ২টার দিকে পৌর এলাকার ধারাবহরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে কিছু মানুষ জড়ো হলে সেখানে পুলিশ ও বিজিবি আসলে উত্তেজনা দেখা দেয়। এসময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলিতে বিদ্ধ হয়ে তাজ উদ্দিন ও সানি আহমদ মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। স্থানীয়রা পরে তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এর আগে দুপুরে ঢাকাদক্ষিণে এলাকাবাসীর সঙ্গে পুলিশ-বিজিবির সংঘর্ষের সময় গুলিবিদ্ধ হন নাজমুল ইসলাম। তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কিছুক্ষণ পর তিনি মারা যান।
উল্লেখ্য, রবিবার দুপুর থেকে আন্দোলনে উত্তপ্ত-উত্তাল পুরো সিলেট। মহানগরসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে আন্দোলনকারীদের চলছে সংঘর্ষ। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত গোলাপগঞ্জে ৩ জন মারা গেছেন। মহানগরসহ সিলেটজুড়ে পুলিশসহ শত শত লোক আহত হয়েছেন।