তারেক জাহান চৌধুরী: রান পেলেন কেবল নাজমুল হোসেন শান্ত ও তাওহীদ হৃদয় । দীর্ঘ সময় উইকেটে থেকেও লিটন দাস ইনিংস বড় করতে পারেননি , ঠিক তার মতো ব্যর্থ হন বাকি ব্যাটাররাও।
আজ শুক্রবার অ্যান্টিগায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ম্যাচে বৃষ্টি আইনে ২৮ রানে হেরেছে বাংলাদেশ অস্ট্রেলিয়ার কাছে। একধম শুরুতে ব্যাট করে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৪০ রান করে বাংলাদেশ।
তারপরই ওই রান তাড়ায় নেমে ঝুমুল বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হওয়ার আগে মোট ১১ ওভার দুই বলে ২ উইকেট হারিয়ে ঠিক ১০০ রান করে অজিরা।
তানজিদ হাসান তামিম মিচেল স্টার্কের ফুল লেন্থের বল ডিফেন্ড করতে যান। কিন্তু ৩ বলে শূন্য রানে ফেরেন তানজিদ। তার বিদায়ের ওভারেই শান্ত একটি চার হাঁকান।
পরবর্তী ওভারে জশ হ্যাজলউড দেন মেডেন। শান্তর ব্যাট থেকেই ছক্কাও আসে প্রথম বাউন্ডারির মতো । প্রথম বলেই ছক্কা হজম করেন হ্যাজলউড নিজের দ্বিতীয় ওভারে। ঠিক পরবর্তী ওভারে স্টার্ককে দুটি বাউন্ডারি হজম করে রানের চাকা সচল রাখেন লিটন দাস।
প্যাট কামিন্স পাওয়ার প্লের শেষ ওভার করতে এসে সর্বমোট ১২রান হজম করেন। বাংলাদেশ ৩৯ রান করে ছয় ওভারে। প্রথম উইকেট হারানোর চাপ তারা কিছুটা সামলে উঠেছিল লিটন দাস ও নাজমুল হোসেন শান্তর জুটিতে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো এই স্বস্তি যে খুব বেশি একটা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি বাংলাদেশের জন্য।
অ্যাডাম জাম্পার এর মতে জানা যায় সুইপ করতে গিয়ে মিস করেন লিটন। বল তার পেছনের পায়ে লেগে চলে যায় স্টাম্পে। লিটন ২৫ বলে ১৬ রান করে আউট হন। ঠিক তখন্ভই ভাঙে শান্তর সঙ্গে তার ৪৮ বলে ৫৮ রানের এই জুটি। রিশাদ হোসেনকে এরপরই প্রমোশন দিয়ে পাঠানো হয় ব্যাটিংয়ে। কিন্তু গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের বলে ব্যাটের আগায় লেগে ক্যাচ যায় জাম্পার হাতে ।
এরপর সাজঘরে ফিরলেন শান্তও। জাম্পার বলে তিনি এলবিডব্লিউ হয়ে যান। কিন্তু এর আগে শান্ত পাঁচটি চার ও ১টি ছক্কায় ৩৬ বলে ৪১ রান করেন। সাকিব আল হাসান এর সঙ্গী হন দয়ের। তিনি ১০ বলে ৮ রান করে স্টয়নিসের বলে তার হাতে ক্যাচ দেন।
হৃদয় স্ট্রাইক পান সাকিব আউট হওয়ার এক বল পর। তিনি মার্কোস স্টয়নিসকে টানা দুটি ছক্কা হাঁকান। কিন্তু প্যাট কামিন্স ঠিক পরের ওভারের শেষ দুই বলে দুই উইকেট তুলে নেন। প্রথমে তার বাউন্সারে পুল করতে গিয়ে বল স্টাম্পে চলে আসে ৩ বলে ২ রান করা মাহমুদউল্লাহর। পরের বলে মাহেদী হাসান আপার কাট করতে গিয়ে থার্ডম্যানে ক্যাচ দেন।
কামিন্স নিজের পরের ওভারে এসে হ্যাটট্রিকও পূরণ করে নেন । হৃদয় দুটি চার ও সমান ছক্কায় ২৮ বলে ৪০ রান করে স্কুপ করতে গিয়ে শর্ট ফাইন লেগে ক্যাচ দেন। কামিন্স হ্যাটট্রিক করেন স্রেফ দ্বিতীয় বোলার হিসেবে বিশ্বকাপে। বাকি চার বলে সাত রান নেন তাসকিন আহমেদ ও তানজিম হাসান সাকিব।
মাহেদী হাসান রান তাড়ায় নামা অস্ট্রেলিয়ার সামনে প্রথম ওভার করতে এসে ৫ রান দেন। দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলে বাংলাদেশ সুযোগ পেয়ে যায়। কিন্তু তানজিমের বল পয়েন্টে দাঁড়িয়ে নিতে তাওহীদ হৃদয় পারেননি। এরপর ঝড়ের শুরু হলো অস্ট্রেলিয়ার দুই ওপেনারের।
চতুর্থ ওভারে মোস্তাফিজ ১৪ তাসকিন পরের ওভারে ১৫ রান দেন । তানজিম ১০ রান দেন পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে। তারা ৫৯ রান তোলে ছয় ওভারে। এরপর দুই বল হতেই নেমে আসে ঝুমধারা বৃষ্টি।
বৃষ্টির বিরতির পর ফিরে বাংলাদেশকে কিছুটা স্বস্তি এনে দেন রিশাদ হোসেন। তার বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরত যান ট্রাভিস হেড। এর আগে ২১ বলে তিন চার ও দুই ছক্কায় ৩২ রান করেন তিনি। নিজের পরের ওভারে এসেও রিশাদ উইকেট পান।
এবার তার বলে এলবিডব্লিউয়ের মিচেল মার্শ ফাঁদে পড়েন। কিন্তু এরপরও ঝড় থামেনি অজিদের। আগে থেকেই উইকেটে থাকা ওয়ার্নারের সঙ্গে এবার ম্যাক্সওয়েল যোগ দেন। ১২তম ওভারে বৃষ্টি নামার আগে দুজন ১৪ বলে ৩০ রান করেন।
৫ চার ও ৩ ছক্কায় ৩৫ বলে ৫৩ রান করে ওয়ার্নার এবং ৬ বলে ১৪ রান করে ম্যাক্সওয়েল অপরাজিত থাকেন। বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হয় ১১ ওভার ২ বলের সময় , এরপর আর বৃষ্টি না হলে আইনে জয় পায় অস্ট্রেলিয়া।
For more information
আরো দেখুন|